ঈদুল আযহা ২০২5 কত তারিখ

Share on:

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক, ঈদুল আজহা এবং কোরবানির ঈদ ২০২5 কত তারিখে? এ বিষয়ে আমাদের মধ্যে যারা জানতে চাচ্ছেন তাদের জন্য এই আর্টিকেলটি খুবই গুরুত্বপুর্ণ। কারন, পবিত্র ঈদের সময় জানা আমাদের জন্য খুবি জরুরি।আমাদের মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য প্রতি বছরে দুটি আনন্দের উৎসব আল্লাহ পাক নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। এর মধ্যে একটি হলো ঈদুল ফিতর অন্যটি ঈদুল আজহা। আমরা আজকের এই পোস্টে ঈদুল আজহা নিয়ে আলোচনা করবো। আমাদের মধ্যে অনেকাই আছে যারা এখন থেকেই ইন্টারনেট ঈদ-উল-আযহা ২০২5 কত তারিখে জানতে চান এবং গুগলে সার্চ করেন তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি লেখা।

ঈদুল আযহার সম্ভাব্য তারিখ

প্রতিটা ঈদ সাধারণ আরবি মাসের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী হয়ে থাকে সেই ক্যালেন্ডার থেকে আমরা ইংরেজি মাসের একটি তারিখ নির্ধারণ করে থাকি। সেই তারিখ অনুযায়ী ২০২5 সালে কোরবানির ঈদ হবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে 5 জুন এবং বাংলাদেশে হবে 6 জুন।

Eid al-Adha Calendar for 5 year’s (সম্প্রতি ৫ বছরের ঈদুল আযহার ক্যালেন্ডার)

২০২২১০ জুলাইরবিবারঈদুল আযহা
২০২৩২৯ জুনবৃহস্পতিবারঈদুল আযহা
২০২৪১৭ জুনসোমবারঈদুল আযহা
২০২৫৬ জুনশুক্রবারঈদুল আযহা
২০২৬২৭ মেবুধবারঈদুল আযহা

ঈদুল আযহার তারিখ যে ভাবে নির্ধারণ করা হয়

হ্যাঁ, হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুসারে ঈদুল আজহার কুরবানি জিলহজ্জ্ব মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু করে ১২ তারিখ পর্যন্ত তিন দিন ধরে চলে। এই তিন দিনকে বলা হয় “ইয়াওমুল আযহা” বা “ঈদের দিন”। ঈদুল আজহার কুরবানি করা মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজিব ইবাদত।

হিজরি চান্দ্র বছরের গণনা অনুযায়ী, ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার মাঝে ২ মাস ১০ দিন ব্যবধান থাকে। দিনের হিসেবে যা সর্বোচ্চ ৭০ দিন হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৩ সালে ঈদুল ফিতর হয়েছিল ২ মে এবং ঈদুল আজহা হয়েছিল ২৯ জুন। এই দুই ঈদের মধ্যে ব্যবধান ছিল ৭০ দিন।

মুমিনের জীবনে কোরবানি এবং ঈদুল আজহার গুরুত্ব

ঈদুল আজহা এবং কোরবানি মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব। এই উৎসব মুমিনদের জীবনে অনেক গুরুত্ব বহন করে।

মুমিনের জীবনের একমাত্র আরাধনা মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা। কোরবানি প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর নৈকট্য লাভের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। কোরবানি করার মাধ্যমে মুমিনরা তাদের সম্পদ, জান-মাল, ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা সবকিছু আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করে। এটি মুমিনদের অন্তরের কৃপণতা ও হিংসা-বিদ্বেষ দূর করে এবং তাদেরকে আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ও ভক্তিশীল করে তোলে।

কোরবানির ঈদ-পালনের মাধ্যমে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ আল্লাহর প্রিয় বান্দা ও নবী হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও হজরত ইসমাইল (আ.)এর অতুলনীয় আনুগত্য এবং মহান ত্যাগের পুণ্যময় স্মৃতি বহন করে। হজরত ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহর নির্দেশে তার প্রিয় পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)কে কোরবানি করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু আল্লাহর রহমতে শেষ মুহূর্তে হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি করা হয়। এই ঘটনা থেকে মুমিনরা শিক্ষা লাভ করে যে, আল্লাহর জন্য সবকিছুই ত্যাগ করা যায়।

ঈদ সম্পর্কে বর্ণিত হাদিস

رَسُولُ اللّهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ الْمَدِينَةَ وَلَهُمْ يَوْمَانِ يَلْعَبُونَ فِيهِمَا، فَقَالَ: مَا هَذَانِ الْيَوْمَانِ؟ قَالُوا: كُنّا نَلْعَبُ فِيهِمَا فِي الْجَاهِلِيّةِ، فَقَالَ رَسُولُ اللّهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ: إِنّ اللّهَ قَدْ أَبْدَلَكُمْ بِهِمَا خَيْرًا مِنْهُمَا: يَوْمَ الْأَضْحَى، وَيَوْمَ الْفِطْرِ.

হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন হিজরত করে মদীনায় আসলেন তখন মদীনাবাসীর দুটি উৎসবের দিবস ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের জিজ্ঞেস করলেন, এ দুটি দিবস কী? (কী হিসেবে তোমরা এ দু’দিন উৎসব পালন কর?) তারা বলল, জাহেলিয়াত তথা ইসলামপূর্ব যুগে আমরা এ দিনদুটিতে উৎসব পালন করতাম। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ তোমাদেরকে এ দুটি দিনের পরিবর্তে এর চেয়ে উত্তম দুটি দিন দান করেছেন- ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিত্র। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১১৩৪; সুনানে নাসায়ী, হাদীস ১৫৫৬; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১২০০৬ 

ঈদুল আজহার কুরবানি করার জন্য প্রয়োজনীয় শর্তাবলী হল:

  • মুসলমান হওয়া
  • পূর্ণবয়স্ক হওয়া
  • বালেগ হওয়া
  • সুস্থ হওয়া
  • স্বাধীন হওয়া
  • নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়া

নিসাব পরিমাণ সম্পদ হল, যার মূল্য সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে বারো মণ রূপা বা এর সমপরিমাণ সম্পদ।

যে ব্যক্তি কুরবানি করবে, তার জন্য ঈদুল আজহার দিন সূর্য উদয় হওয়ার পর থেকে ঈদুল আজহার দিন সূর্যাস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত কুরবানি করা বৈধ।

উপসংহার

আশা করি আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনারা ঈদুল আযহার তারিখ এবং ঈদুল আযহা সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানতে পেরেছেন । আর্টিকেলটি যদি আপনাদের নিকট তথ্যবহুল এবং প্রয়োজনীয় মনে হয় তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts

Disclaimer: All trademarks, logos, images, and brands are property of their respective owners. If you have any opinion or request or you find any bug/issues, please Contact Us